পুলিশ লাইনের ছাত্রকে ধরল পুলিশ, বোনের ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল

সানজানা আক্তার স্নেহা নামে এক তরুণীর কলেজ পড়ুয়া ছোট ভাইকে নিয়ে দেয়া ফেসবুকে একটি পোস্ট এরইমধ্যে অনেকেই নিজেদের টাইমলাইনে শেয়ার করেছেন। পোস্ট করে হ্যাসট্যাগ দিয়েছেন ‘আলফি শাহরিয়ার মাহিমের মুক্তি চাই’।
সানজানা আক্তার স্নেহা তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘আমার ছোট ভাই, (আবু সাঈদের হত্যা মামলায় গ্রেফতার) মো. আলফি শাহরিয়ার মাহিম। বয়স: ১৬ বছর ১০ মাস, শ্রেণি: একাদশ (এইচএসসি ২৫)। কলেজ আইডি: 17660 বিদ্যালয়: পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ রংপুর। সিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাক্তন ছাত্র।
আমার ভাই অত্যন্ত মেধাবী,শান্ত, ভদ্র একটা ছেলে। ১৮ তারিখ সে কলেজের উদ্দেশ্যে বের হলে জানতে পারে পরীক্ষা স্থগিত, তখন বন্ধুদের সাথে মিছিলের মাঝে জড়িয়ে পড়ে, এবং পুলিশের টিয়ারশেলে বন্ধুদের থেকে আলাদা হয়ে যায়। পরবর্তীতে আমরা ১৮ তারিখ আনুমানিক ৪টায় ওর বন্ধুদের থেকে জানতে পারি তার পায়ে রাবার বুলেট লেগেছে, সেখানের লোকাল মানুষজন কোনো হসপিটালে এডমিট করিয়েছে। রাত ১০টা পর্যন্ত সব হসপিটাল ক্লিনিক খুঁজেও যখন পাচ্ছিলাম না। বাবার কাছে একটা কল আসে, তারা জানায় আপনার ছেলে আমাদের হেফাজতে আছে। জানাজানি করিয়েন না তাতে ছেলের ক্ষতি হবে, তাকে আগামীকাল সকালে ছেড়ে দেয়া হবে চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু পরের দিন ১৯-৭-২৪ সকালে আমরা খোঁজ নিলে তারা অস্বীকার করে বলে তাদের কাছে এই নামে কেউ নেই। এরপর আনুমানিক বিকেল ৪:৩০টায় কোর্ট থেকে কল আসে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আমরা কোর্ট থেকে নথিপত্র নিয়ে জানলাম তাকে আবু সাইদ ভাই এর হত্যা মামলা দেয়া হয়েছে। সেদিন থেকে বার বার কারাগারের দরজা থেকে ফিরে এসেছি, একটা বার দেখা তো দূর তার কন্ঠও শুনতে দেয়নি কেউ। মেট্রো কোর্ট তার মামলা কিছুতেই শিশু কোর্টে দিতে চায়নি অনেক চেষ্টা করে গত ৩০ জুলাই শিশু কোর্টে নেয়া হলে ডেট দেয় আগামী ৪ই আগস্ট। ৪ তারিখ কী রায় দিবে আমার জানা নেই, তবে আমি আমার ভাইকে ফিরত চাই, বেকসুর খালাস দেওয়া হোক এটা চাই।’
‘যে ছেলেটা লিগাল ডকুমেন্টস অনুযায়ী শিশু, তাকে তারা কোন হিসেবে এভাবে হ্যারাস করাচ্ছে? সব থেকে বড় কথা তার গায়ে কলেজ ড্রেস ছিল, আইডি ছিল, সে পুলিশদের ইনস্টিটিউট এরই ছাত্র। এক্ষেত্রে কি তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, সহপাঠী, আইনজীবী কারো কিছুই করার নাই? আমার ভাইকে কোন লজিকে তারা আটকে রেখেছে, দেখাও করতে দিচ্ছে না!’
#আলফিশাহরিয়ারমাহিমেরমুক্তিচাই
#We_want_justice
তিনি জানান, ১৮ তারিখে যখন তাজহাট থানায় হামলা চাালনো হয়, তখন পুরো পরিস্থিতি ছিল অন্যরকম। অনেক পুলিশ আটকা পড়ে। সে সময় থানা থেকে সবাই চলে আসার সময় এক পুলিশ সদস্য জানায় একজন থানায় আটক আছে। তখন তাকে সেখান থেকে নিয়ে আসা হয়। পরদিন ১৯ তারিখ আবারও সহিংসতা শুরু হয়। নাশকতার ঘটনায় অনেককে আটক করা হয়। তখন আসলে যাচাই বাছাইয়ের সুযোগ ছিল না কে ছাত্র আর কে অছাত্র। অন্য আসামিদের সাথে তাকেও চালান দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শুক্রবার নতুন কর্মসূচি দিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ
তিনি বলেন, ‘এখন আমরা জানতে পারি সে যে ছাত্র। তার বাবা, মাকে আমরা প্রয়োজনীয় কাগজ নিয়ে আসতে বলেছি। ইতিমধ্যে কলেজের শিক্ষকদের সাথে কথা বলেও আমরা নিশ্চিত হয়েছি সে পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী।’
আবু মারুফ বলেন, ‘প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দিলেই আমরা তাকে ছেড়ে দেয়ার ব্যবস্থা করব। কোনো শিক্ষার্থী বা নিরাপরাধ কাউকে আমরা গ্রেফতার করব না। সে বিষয়ে আমরা যথেষ্ট কেয়ারফুল রয়েছি।’